কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে ধরলার চরের কৃষকগণ। এবারে কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর বুকে পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দামও মিলছে আশানুরুপ বেশি। কিন্তু রোগবালাইয়ের আশংকায় কীটনাশক ব্যবহার করলেও সরকারি কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তদারকী না থাকায় হতাশ কৃষকগণ। তবে কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, যেকোনো ধরণের পরামর্শ দিতে তৈরি আছে তারা।
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর ও দণি নওয়াবশ গ্রামজুড়ে ধরলা নদীর বুকে প্রায় ৫৫ একর জমিতে পটল চাষ করেছে প্রায় শতাধিক কৃষক। বাম্পার ফলনও হয়েছে এবার। কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টি আর তিব্র খরার কারণে পটলের পাতা লালবর্ণ হয়ে পচে যাচ্ছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও আশংকায় থাকা কৃষক কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির কারণে ক্ষুব্ধ ও হতাশ।
এবছর চড়া সুদে ঋণ করে পটল চাষ করে পোকার আক্রমনে লোকসানের আশংকায় রয়েছে তারা। খামারবাড়ীর দেয়া তথ্যে চলতি খরিপ মৌসুমে ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর সবজির মধ্যে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর বাকী মৌসুম জুড়ে পটল বিক্রি করতে পারবে চাষীরা। বাজারে চাহিদাও আছে ব্যাপক। এখন রমজান মাস উপলে নতুন পটলের চাহিদা প্রচুর। মাঠে ৪০ থেকে ৪৫টাকা কেজি দাম পরলেও খুচরা বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্চে পটল।
কথা হলে পটলচাষী আব্দুল মান্নান জানান, বৃষ্টি ও তিব্র খরার কারণে পটল তে লালবর্ণ ধারণ করছে। শুকিয়ে যাচ্ছে পাতা ও ডগা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখন পযন্ত কৃষি বিভাগ থেকে কেউ দেখতে আসেনি বা কোন খবরও নেয়নি।
আরেক পটলচাষী গোলাম মওলা জানান, রমজান মাসের এই সময়ে বাজারে নতুন পটলের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। গতকাল ২ হাজার টাকা মনে পাইকাররা নিয়ে গেছে। আজ একটু দাম পরেছে। ১৮০০ টাকা দাম বলছে।
উত্তর নওয়াবশ গ্রামের মাসুদ মোক্তার জানান, গতবার এক একর জমিতে পটল আবাদ করেছি। তে তৈরী করতেই প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবার জাংলা খরচ লাগছে না ফলে অর্ধেক খরচে পটল লাগানো হয়েছে।
ক্ষোভভ প্রকাশ করে পটলচাষী বক্কর মিয়া বলেন, দিন দিন কৃষি বিভাগের লোকজন ধান্দবাজীতে নেমেছে। তারা প্রকৃত কৃষককে কিছু দিতে চায় না। যেসব কৃষক তাদেরকে খুশি করতে পারে তাদেরকেই তারা সহযোগিতা করে। দেখেন এখানে পটল ক্ষেতে সমস্যা দেখা দিয়েছে কিন্তু তারা কোন খোঁজখবর নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, জেলার চরাঞ্চলগুলোতে পটলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগবালাইয়ের বিষয়ে সেবা দিতে তিনি নিজেসহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপসহকারি কৃষি অফিসাররা সবময় তৈরি আছেন।