মানুষের জন্য ডেস্ক: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৮৭ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪ হাজার ১৭৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত ৬ হাজার ৬৮৪ জন। গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার একজনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৬৮৪ জন। ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত ৮৪ লাখ ৮ হাজার ৫২১টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৯০২ জন। মোট নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১৮৭ জন। এর মধ্যে ১০১ জন পুরুষ এবং ৮৬ জন নারী। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে দুজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৪ জন রয়েছে। মৃতদের অঞ্চল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ৭১ জন, চট্টগ্রামে ৩৯, রাজশাহী ১২, খুলনায় ২১, বরিশালে আটজন, সিলেটে ১৩, রংপুরে ১৩ জন ও ময়মনসিংহে ১০ জন রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১১ হাজার ৩৭১ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে তিন হাজার ২১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে দুই হাজার ২৩৯ জন, রংপুর বিভাগে ৩৮৯, খুলনায় ৮১৪, বরিশালে ৬৩৯, রাজশাহীতে তিন হাজার ২৪২, সিলেটে ৪৭৪ জন এবং ময়মনসিংহে ৩৬৪ জন রয়েছে।
পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া গেলেই গণটিকা শুরু হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, পর্যাপ্ত টিকা হাতে না আসায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আপাতত আর গণটিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। সারাদেশে টিকা কার্যক্রমের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ টিকা হাতে এলেই আবার গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। গতকাল মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গণটিকা বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার সক্ষমতা যে আমাদের আছে, সেটি প্রমাণ হয়েছে। একদিনে ৩৪ লাখ ভ্যাকসিন আমরা দিয়েছি। একটা ট্রায়ালও হয়ে গেছে। এখন ভ্যকসিন প্রাপ্যতা সাপেক্ষে আগামী দিনের কার্যক্রম চলবে। তিনি জানান, চায়নার সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে ছয় কোটি ভ্যাকসিনের জন্য। ইতোমধ্যে চলতি মাসে ৫৪ লাখ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মাসের শেষ দিকে আরও ৫০ লাখ টিকা আসবে। স্বাভাবিক ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু থাকবে। দেশজুড়ে গত ৭ আগস্ট থেকে ছয় দিনের গণটিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করেছে সরকার। যদি পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকে, তা হলে শহর ও গ্রামে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। কম থাকলে কার্যক্রম ডিজাইন করা হবে। ভ্যাকসিন পাওয়া সাপেক্ষে গ্রামপর্যায়ে দেওয়া হবে, আপাতত যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে।
জাহিদ মালেক আরও জানান, যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে আগামী সপ্তাহে চুক্তি হবে। রাশিয়ার সঙ্গে টিকা চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। এখন টিকা পেতে অপেক্ষা। ভারতের কাছে পাওনা আছে দুই কোটি ৩০ লাখ।
নারীদেরও টিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চাশোর্ধ্বদের সবার আগে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কারণ তারাই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করছে। যত মৃত্যু ঘটছে তার ৯০ শতাংশই বয়স্ক মানুষ। নারীও অনেক বেশি মৃত্যু হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই মধ্যবয়সী।
বিধিনিষেধ নিয়ে কোভিড জাতীয় কারিগরি কমিটির সুপারিশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পরামর্শক কমিটি সব সময় ভালো পরামর্শ দেন। তারা জানিয়েছেন লকডাউনটা আরও কিছু দিন চললে ভালো হতো। কিন্তু জীবন-জীবিকার কথা ভেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এখন যেহেতু সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি কমতে শুরু করেছে। গত মাসেও সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেক খারাপ ছিল। সংক্রমণের হার ৩২ শতাংশে উঠে গিয়েছিল। এখন এটি কমে গিয়ে ২০ শতাংশের মধ্যে চলে এসেছে। আমরা ৫ শতাংশের নিচে সংক্রমণ চাই।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বক্তব্য রাখেন।