অন্ধ চোখেই আলো ছড়াচ্ছেন মালিকা

0
69

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনে কোণঠাসা নারীদের অন্ধকার জীবনে আশার আলো ছড়াচ্ছেন মালিকা নামের অন্ধ এক নারী। বয়স ২১ বছর। দৃষ্টিহীন হয়েও বেঁচে থাকার সংগ্রামে নেমেছেন। অর্থ উপার্জন করছেন পরিবারকে সহায়তা করছেন। সংসার চালাচ্ছেন। বাঁচতে শেখাচ্ছেন অন্য নারীদেরও। অন্ধ চোখেই আলো ছড়াচ্ছেন মালিকা। পাড়াপড়শি, কাছের মানুষ সবার কাছেই তিনি এখন ‘আলোর বাতিঘর’।

২০২১ সালের ১৫ আগস্টে আবার ক্ষমতায় আসার পর লাখ লাখ নারীর অধিকার ছিনিয়ে নেয় তালেবান। বন্ধ করে দেয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। নিষিদ্ধ করা হয় আয়-রোজগারের পথ। হতাশার আগুনে পুড়তে শুরু করেন নারীরা। বদ্ধ জীবনে গুমড়ে কাঁদা সেসব নারীর ধূমকেতুর মতো আশার আলো ছড়িয়ে দেন মালিকা। নারীদের কঠিন জীবনকে সহজ করে তুলতে তৈরি করেন নতুন রোজগারের পথ। অক্ষমতা সত্ত্বেও নারীদের সহায়তা করতে চালু করেন সেলাইয়ের স্কুল।

জুম ক্লাসের মাধ্যমে শেখান সেলাইয়ের কাজ। ১২০ জনেরও বেশি নারী তার সঙ্গে কথা বলেন। যাদের বেশির ভাগই অন্ধ। ভবিষ্যতের জন্য কিভাবে আশাবাদী হতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে মাঝে মাঝে আলোচনা সভারও ব্যবস্থা করেন। সব হতাশা ঝেড়ে ফেলে নারীরা যেন নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে পারে ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে পারে সেজন্যই হস্তশিল্প ব্যবসার পদক্ষেপ নেন মালিকা। বলেন, ‘আফগান মেয়েদের অধিকার দরকার। আমি কিছু করতে পারি বা না পারি আমি অন্য নারীদের সাহায্য করতে পারি।’

একটি বিদেশে পরিচালিত কাবুল স্কুলে শেলাই কাজ শিখতেন মালিকা। পাঁচ বছর আগে অন্ধদের স্কুলে পড়ার জন্য উপজাতি অধ্যুষিত বামিয়ান উপত্যকা থেকে কাবুলে আসেন। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর তিনি স্কুলে যেতে না পারায় গভীরভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। বলেন, ‘অন্ধ হওয়া সত্ত্বেও আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। নিজের দেশে বা বিদেশে ব্যবসা খোলার কথা ভেবেছিলাম।’ তবে হাল ছাড়েননি। হতাশার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেননি। পাহাড়সমান বাধা মাড়িয়ে ঘুরিয়েছেন জীবনের মোড়। নিজের ও অন্যদের সহায়তা করার জন্য বেছে নিয়েছেন হস্তশিল্পের কাজ। একপর্যায়ে তার দিকে হাত বাড়ায় আফগানিস্তানে নারীদের সহায়তা প্রদানকারী একটি এনজিও সংস্থা অ্যাসেল।

এফএস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here